মিয়ানমারের কারাগারে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা শেষে করে ২৯ বাংলাদেশী দেশে ফিরেছেন।
মঙ্গলবার মিয়ানমারের মংডু শহরে অনুষ্ঠিত পতাকা বৈঠক শেষে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এর প্রতিনিধিদলের কাছে এই ২৯ জনকে হস্তান্তর করা হয়। যাদের দুপুরে নাফনদী হয়ে ফেরত আনা হয় টেকনাফে।
ফেরত আসা বাংলাদেশীরা হলেন, কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার বড় মহেশখালী ইউনিয়নের ধোপাপাড়ার আনছারুল হকের ছেলে শাকের উল্লাহ (২৮), একই এলাকার কামাল পাশার ছেলে এখলাছ মিয়া (২৬), একই উপজেলার মুন্সির ডেইল এলাকার আবুল কালামের ছেলে শফি আলম (২৫), একই এলাকার হোসেন আহমেদের পারভেজ (২৪), রহমত উল্লাহর ছেলে মিজানুর রহমান (১৮), একই উপজেলার লম্বাঘোনা আদর্শ গ্রামের আলতাস হোসেনের ছেলে মোবারক মিয়া (২৪), একই এলাকার মো. আবদুর রহিমের ছেলে মো. মহিউদ্দিন (২২), একই উপজেলার দবঙ্গপাড়ার আব্দুল শুক্কুরের ছেলে ছালামত উল্লাহ (১৭), উখিয়া উপজেলার ইনানীর মাদারবুনিয়া এলাকার নুরুল আলমের ছেলে মো. শাহেদ (১৮), মহেশখালী উপজেলার রাখাইন পাড়ার ইউ হ্লা তুন সিং এর ছেলে মং সিন (৪২), বান্দরবন জেলা সদরের কিবুকপাড়ার মং সিং মারমার ছেলে সিন থোয়ে মং মারমা (৩২), লামার ইউ থোয়ে সিনের ছেলে থান তুন হ্লা (৩৬), বান্দরবন সদরের কিবুকপাড়ার ইউ আরি মনের ছেলে থুইচিং প্রæ (২৩), রাঙ্গামাটি জেলার কাউখালীর ইউ হ্লা থুন পিউর ছেলে ইয়ং ছা থুই মারমা (২৬), টেকনাফ উপজেলার নাইট্যংপাড়ার শামসুল আলমের ছেলে মো. ইরফান (২২), একই এলাকার নুর হোসাইনের ছেলে মো. ইলিয়াছ (১৯), মো. সালামের ছেলে মো. জহির আহমেদ (৩১), জালিয়াপাড়ার মো. ইব্রাহিমের ছেলে মো. আব্দুল আজিজ (২১) ও মো. তৈয়েব (৩২), হ্নীলা দক্ষিণ লেদার হায়দার আলীর ছেলে আব্দুর সিদ্দিক (২৭), নুরুল ইসলামের ছেলে রুবেল (২০), রাঙ্গামাটির বেতবুনিয়া এলাকার আর পিউ সিনের ছেলে ইউ তান ওয়ারা ওরফে স্যার থুই ইউ (৩৪), কাউখালীর সুইবাই অং মারমার ছেলে থান হ্লা সিন সোয়ে সিন ইউসিচিং মারমা (৩০), মহেশখালীর পানিছড়ার আবদুল হকের ছেলে গিয়াস উদ্দিন (২২), দবঙ্গপাড়ার আবদুস সামাদের ছেলে রাকিবুল হাসান রাকিব (২২), সিপাহী পাড়ার মোহাম্মদ শফির পুত্র জাহাঙ্গীর আলম (৩৫), লম্বাঘোনা আদর্শ গ্রামের নেজাউল করিমের ছেলে মোবারক উদ্দিন (১৮), ইনানীর মাদারবুনিয়া এলাকার আবদুল গফুরের ছেলে মো. তারেক (১৯), রশিদ আহমেদের ছেলে মো. সাবের (২৩)।
মঙ্গলবার সকালে টেকনাফ ২ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্ণেল মহিউদ্দিন আহমদের নেতৃত্বে বাংলাদেশের ১৫ সদস্যের প্রতিনিধিদল টেকনাফের জালিয়াপাড়া জেটিঘাট হয়ে মিয়ানমারে যান। যেখানে মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশের ১ নম্বর ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক পিইন ফিউ এর নেতৃত্বে ১১ সদস্যের প্রতিনিধি দলের সাথে বৈঠক করেন। আলোচনার পর বিজিবির কাছে এই ২৯ জনকে হস্তান্তর করা হয়। দুপুরে টেকনাফের জেটি ঘাটে ফিরে গণমাধ্যমের সাথে কথা বলেন, টেকনাফ ২ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্ণেল মহিউদ্দিন আহমদ।
তিনি জানান, উভয় পক্ষের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ ও বন্ধুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়েছে। সীমান্তের চোরাচালান রোধ, মাদক, অনুপ্রবেশ রোধে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে মিয়ানমার। আলোচনার পর বিভিন্ন সময় সীমান্তে অনুপ্রবেশের কারণে আটক ২৯ জন বাংলাদেশীর কারাভোগ শেষ হওয়ায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
তিনি জানান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বিজিবি এবং বাংলাদেশ কনস্যুলেটের দীর্ঘদিন প্রচেষ্টার ফলে মিয়ানমারের কারাগার থেকে মুক্তিপ্রাপ্ত ২৯ জন বাংলাদেশীকে কূটনৈতিক যথাযথ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে বাংলাদেশ ফেরত আনা হয়েছে। ফেরত ২৯ জন পরিবারের কাছে হস্তান্তরের জন্য পুলিশের কাছে দেয়া হয়েছে।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম জানিয়েছেন, বিজিবির প্রতিনিধি দলের সাথে জেলা পুলিশ ও ইমিগ্রেশন পুলিশের সদস্য ছিল। এদের ফেরত আনার পর তাদের নাম ঠিকানা যাচাই বাছাই শেষে স্ব-স্ব থানা পুলিশের মাধ্যমে স্বজনদের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। তবে ফেরত আনাদের মধ্যে কোন মামলার আসামি বা অপরাধি থাকলে তাদের আইনের আওতায় নেয়া হবে।